বিদেশে বাংলাদেশি কর্মীদের মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। যার একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী কর্মী। মৃত নারী কর্মীদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ওইসব দেশ থেকে লাশ হয়ে ফিরেছেন ৬৩ নারী। আর গত সাড়ে ৪ বছরে দেশে এসেছে ৪৭৩ জন নারীর লাশ। তবে এই সংখ্যার বাইরেও বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে অনেকের লাশ দাফন করা হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ৯ মাসে যে ৬৩ নারী লাশ হয়ে ফিরেছেন, তাদের মধ্যে ৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। ৫ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়।
৪ জন স্ট্রোকে আর দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩ জন। এছাড়া ১৪ জন আত্মহত্যা করেছেন, যার মধ্যে ৮জনই সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন।
সৌদি আরবে আত্মহত্যা করা নারী শ্রমিকরা হলেন- নাছিমা বেগম (২৬), আফিয়া বেগম (৩৮), তাসলিমা বেগম (২৭), খাদিজা (৩৯), সাফিয়া (৩১), হেলেনা (২৯), মমতাজ (৩৪), নাসরিন (৩১) ও রেখা (৪০)। এরা দেশের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তবে এসব মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিলেও শরীরে রয়েছেন নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন।
সূত্র মতে, ২০১৬ সাল থেকে এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৭৩ নারীর লাশ দেশে ফেরত আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ জন মারা গেছে চলতি বছর। গতবছর পর্যন্ত মৃত ৪১০ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি মারা গেছে সৌদি আরবে। এ সংখ্যা ১৫৩ জন। আর এবছর দেশটিতে থেকে লাশ হয়ে ফিরেছে ২২ জন নারী কর্মী।
বিভিন্ন দেশে নিহতের সংখ্যা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃতদের মধ্যে জর্ডান থেকে ৭৫ জন, লেবানন থেকে ৬৬ জন, ওমান থেকে ৪৫ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৭ জন এবং কুয়েতে ২০ জন মারা গেছেন। অন্যান্য দেশ থেকে এসেছে ৬০ নারীর মরদেহ।
মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ৮১ জনই আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ২০১৬ সালে ৩ জন, ২০১৭ সালে ১২ জন, ২০১৮ সালে ২৩ জন, ২০১৯ সালে ২৯ জন এবং এ বছর ১৪ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরবেই আত্মহত্যা করেছেন ৫১ জন।
আত্মহত্যা ছাড়াও গত চার বছরে ৬৯ নারী দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। যার মধ্যে সৌদি আরবেই মারা গেছেন ২৯ জন। এছাড়া স্ট্রোক করে অনেকেই মারা যান।
উল্লেখ্য, বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী- ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আট লাখেরও বেশি নারী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী কর্মী গেছেন সৌদি আরবে। দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ নারী গেছেন।
Leave a Reply